biblio-excerptise:   a book unexamined is not worth having

ei shatAbdIr premer kabitA

sunIl gangopAdhyAy and dIpak rAy

gangopAdhyAy, sunIl (সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়); dIpak rAy (দীপক রায়) (eds.);

ei shatAbdIr premer kabitA [এই শতাব্দীর প্রেমের কবিতা]

sahityam, kolkAta 1987

topics: |  poetry | bengali | romance


A landmark collection of Bengali love poetry, from Jibananda and Najrul to
Jay Goswami.


দোতালার ল্যাণ্ডিং : আহসান হাবীব প.৩০

মুখোমুখি ফ্ল্যাট
একজন সিড়িতে, একজন দরজায়

: আপনারা যাচ্ছেন বুঝি?
: চলে যাচ্ছি, মালপত্র উঠে গেছে সব ।
: বছর দুয়েক হলো, তাই নয়?
: তারো বেশী, আপনার ডাকনাম শানু, ভালো নাম?
: শাহানা, আপনার?
: মাবু ।
: জানি ।
: মাহবুব হোসেন । আপনি খুব ভালো সেলাই জানেন ।
: কে বলেছে । আপনার তো অনার্স ফাইন্যাল, তাই নয়?
: এবার ফাইন্যাল ।
: ফিজিক্স-এ হনার্স ।
: কি আশ্চর্য! আপনি কেন ছাড়লেন হঠাত্‌?
: মা চান না । মানে ছেলেদের সঙ্গে বসে ...
: সে যাক গে, পা সেরেছে?
: কি করে জানলেন?
: এই আর কি । সেরে গেছে?
: ও কিছু না, প্যাসেজটা পিছল ছিলো মানে...
: সত্যি নয় । উঁচু থেকে পড়ে গিয়ে...
: ধ্যাত্‌ খাবার টেবিলে রোজ মাকে অত জ্বালানো কি ভালো ।
: মা বলেছে?
: শুনতে পাই । বছর দুয়েক হলো, তাই নয়?
: তারো বেশী । আপনার টবের গাছে ফুল এসেছে?
: নেবেন?  না থাক ।  রিক্সা এলো, মা এলেন, যাই।
: যাই । আপনি সন্ধেবেলা ওভাবে কখনো পড়বেন না, চোখ যাবে, যাই।
: হলুদ শার্টের মাঝখানে বোতাম নেই, লাগিয়ে নেবেন, যাই ।
: যান, আপনার মা আসছেন । মা ডাকছেন, যাই ।

মহিষাদল : ধীমান চক্রবর্তী


আমরা এখন প্রত্যেকের মুখের দিকে তাকাবো। আর খুঁজবো সরলতা।

আমার এক বন্ধুর সাথে হৈ হৈ করে এলাম মহিষাদল।
হস্টেলের মেয়েরা মশলামুড়ি খাওয়ালো, লেখার জন্য দিয়েছিল কালি।
স্নানের আগে নারকোল তেল মাখতে মাখতে, মাথার ওপর দিয়ে
উড়ে গেল এয়ারোপ্লেন, আমরা কোনো শব্দ শুনলাম না।
ফেরার আগে চিরসুহৃদের ব্যাগ গুছিয়েছিল গার্গী আর স্বপ্না। এবং
রীতা বললো, আপনি এভাবে কেন বলছেন, আপনার কেউ নেই।
			চেয়ারে রাখা ছিল তার হাত।
ওরা কেউ বুঝতে পারে নি, মহিষাদল যাওয়ার আগে পর্যন্ত
আমি খালি আত্মহত্যার কথা ভাবতাম। এখন আমি
ভালোই আছি। শুধু মনে পড়ছে - হ্যাজাকের সাদা আলো
ছড়িয়ে পড়েছে, মেয়েদের সরল মুখ আর সরলতা।

আকাশলীনা : জীবনান্দ দাশ পৃ. ১

সুরঞ্জনা, ওইখানে যেয়ো নাকো তুমি,
বোলো নাকো কথা এই যুবকের সাথে কথা;
ফিরে এসো সুরঞ্জনা
নক্ষত্রের রুপালি আগুন ভরা রাতে;

ফিরে এসো এই মাঠে, ঢেউয়ে;
ফিরে এসো হৃদয়ে আমার;
দূর থেকে দূরে – আরো দূরে
যুবকের সাথে তুমি যেয়ো নাকো আর ।

কী কথা তাহার সাথে ? তার সাথে ।
আকাশের আড়ালে আকাশে
মৃত্তিকার মতো তুমি আজ :
তার প্রেম ঘাস হয়ে আসে ।

সুরঞ্জনা,
তোমার হৃদয়ে আজ ঘাস :
বাতাসের ওপারে বাতাস
আকাশের ওপারে আকাশ ।

	[সাতটি তারার তিমির (১৯৪৮),wiki]

রাত্রি : অমিয় চক্রবর্তী ৪

অতন্দ্রিলা,
ঘুমোওনি জানি
তাই চুপি চুপি গাঢ় রাত্রে শুয়ে
বলি, শোনো,
সৌরতারা-ছাওয়া এই বিছানায়

সূক্ষ্মজাল রাত্রির মশারি

কত দীর্ঘ দুজনার গেলো সারাদিন,
আলাদা নিশ্বাসে --
এতক্ষণে ছায়া-ছায়া পাশে ছুঁই
কী আশ্চর্য দু-জনে দু-জনা --
অতন্দ্রিলা,
হঠাত্ কখন শুভ্র বিছানায় পড়ে জ্যোত্স্না,
দেখি তুমি নেই ||

    অমিয় চক্রবর্তীর আরো কবিতা:  milansagar.com

কুড়ানি : মণীশ ঘটক ৭

           ১
স্ফীত নাসারন্ধ্র. দু'টি ঠোঁট ফোলে রোষে,
নয়নে আগুন জ্বলে। তর্জিলা আক্রোশে
অষ্টমবর্ষীয়া গৌরী ঘাড় বাঁকাইয়া,
"খট্টাইশ, বান্দর, তরে করুম না বিয়া।"

এর চেয়ে মর্মান্তিক গুরুদন্ডভার
সেদিন অতীত ছিলো ধ্যানধারণার।
কুড়ানি তাহার নাম, দু'চোখ ডাগর
এলোকেশ মুঠে ধরি, দিলাম থাপড়।
রহিল উদ্‌গত অশ্রু স্থির অচঞ্চল,
পড়িল না এক ফোঁটা। বাজাইয়া মল
যায় চলি; স্বগত; সক্ষোভে কহিলাম
"যা গিয়া! একাই খামু জাম, সব্রি-আম।"

গলিতাশ্রু হাস্যমুখী কহে হাত ধরি,
"তরে বুঝি কই নাই? আমিও বান্দরী!"

            ২
পঞ্চদশী গৌরী আজ, দিঠিতে তাহার
নেমেছে বিদ্যুত্গর্ভ মেঘের সম্ভার।
অনভ্যস্ত সমুদ্ধত লাবণি প্রকাশে
বিপর্যস্তদেহা তন্বী; অধরোষ্ঠ পাশে
রহস্যে কৌতুকে মেশা হাসির আবীর
সুদূর করেছে তারে -- করেছে নিবিড়!
সান্নিধ্য, সুদুর্লভ, তবুও সদাই
এ-ছুতা ও-ছুতা করি বিক্ষোভ মেটাই।
গাছের ডালেতে মাখি কাঁঠালের আঠা।
কখনো সখনো ধরি শালিক টিয়াটা।
কুড়ানিকে দিতে গেলে করে প্রত্যাখ্যান
"আমি কি অহনো আছি কচি পোলাপান।"

অভিমানে ভরে বুক। পারি না কসাতে
সেদিনের মতো চড়, অথবা শাসাতে।।

           ৩
ছুটিতে ফিরিলে দেশে কুড়ানি-জননী
আশীর্বাদ বরষিয়া কন -- "শোন মণি,
কুড়ানি উন্নিশে পরে, আর রাহি কত?
হইয়া উঠতেয়াছে মাইয়া পাহাড় পর্বত।"
"সুপাত্র দেহুম" -- কহি দিলাম আশ্বাস
চোরাচোখে মিলিল না দরশ আভাস।
ম্লানমুখে, নতশির, ফিরি ভাঙা বুকে,
হঠাৎ শুনিনু হাসি। তীক্ষন সকৌতুকে
কে কহিছে---"মা তোমার বুদ্ধি তো জবর!
নিজের বৌয়ের লাইগা কে বিসরায় বর?"

সহসা থামিয়া গেল সৌর আবর্তন,
সহসা সহস্র পক্ষী তুলিল গুঞ্জন!
সহসা দক্ষিণা বায়ু শাখা দুলাইয়া
সব কটি চাঁপাফুল দিল ফুটাইয়া।।

স্নান : জয় গোস্বামী পৃ. ২১১


সংকোচে জানাই আজ: একবার মুগ্ধ হতে চাই।
তাকিয়েছি দূর থেকে। এতদিন প্রকাশ্যে বলিনি।
এতদিন সাহস ছিল না কোনো ঝর্ণাজলে লুণ্ঠিত হবার -
আজ দেখি অবগাহনের কাল পেরিয়ে চলেছি দিনে দিনে

জানি, পুরুষের কাছে দস্যুতাই প্রত্যাশা করেছো।
তোমাকে ফুলের দেশে নিয়ে যাবে ব'লে যে-প্রেমিক
ফেলে রেখে গেছে পথে, জানি, তার মিথ্যে বাগদান
হাড়ের মালার মতো এখনো জড়িয়ে রাখো চুলে।

আজ যদি বলি, সেই মালার কঙ্কালগ্রন্থি আমি
ছিন্ন করবার জন্য অধিকার চাইতে এসেছি? যদি বলি
আমি সে-পুরুষ, দ্যাখো, যার জন্য তুমি এতকাল
অক্ষত রেখেছো ওই রোমাঞ্চিত যমুনা তোমার?

শোনো, আমি রাত্রিচর। আমি এই সভ্যতার কাছে
এখনো গোপন ক'রে রেখেছি আমার দগ্ধ ডানা;
সমস্ত যৌবন ধ'রে ব্যাধিঘোর কাটেনি আমার। আমি একা
দেখেছি ফুলের জন্ম মৃতের শয্যার পাশে বসে,
জন্মান্ধ মেয়েকে আমি জ্যোৼস্নার ধারণা দেব ব'লে
এখনো রাত্রির এই মরুভুমি জাগিয়ে রেখেছি।

দ্যাখো, সেই মরুরাত্রি চোখ থেকে চোখে আজ পাঠালো সংকেত -
যদি বুঝে থাকো তবে একবার মুগ্ধ করো বধির কবিকে;
সে যদি সংকোচ করে, তবে লোকসমক্ষে দাঁড়িয়ে
তাকে অন্ধ করো, তার দগ্ধ চোখে ঢেলে দাও অসমাপ্ত চুম্বন তোমার
পৃথিবী দেখুক, এই তীব্র সূর্যের সামনে তুমি
সভ্য পথচারীদের আগুনে স্তম্ভিত ক'রে রেখে
উন্মাদ কবির সঙ্গে স্নান করছো প্রকাশ্য ঝর্ণায়। 
    from evergreenbangla.com

Fragments

অনামিকা : নজরুল ২

	কোন নামে হায় ডাকব তোমায়
	    নাম না জানা অনামিকা
	জলে স্থলে গগন তলে
	    তোমার মধুর নাম যে লিখা।।
	...

মনীন্দ্র রায় : ক্রীতদাস  ৩৩
  যেদিন ঘরোয়া ময়নার মতো হাতে এসে বসেছিলে আমার,
  আর গালের পাশে ছুঁইয়েছিলে তোমার সোনালী-হলুদ ঠোঁট,
  কে জানত, তোমার ভাঁজকরা ডানার নিচে রয়ে গেছে কালবৈশাখীর আকাশ,
  আর তোমার বুকের মধ্যে শত শত জটিল অরণ্যের লুপ্ত করতালি !

সুভাষ মুখোপাধ্যায় : তোমাকে বলি নি  ৩৫
  আকাশে তুলকালাম মেঘে
  যেন বাজি ফোটানোর আওয়াজ
  কাল
  তোমার জন্মদিন গেল।

বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় : তোমার মুখ ৩৭

ব্রত চক্রবর্তী : পুলিন ২২১
   আমি ও নিভা কথা বলতে শুরু করলেই
   পুলিন এসে দাঁড়ায় আমাদের মাঝখানে।
   পুলিন এক সময় নিভার বন্ধু ছিল। আমারও।
   ঠিক এখনও আছে কিনা বুঝে উঠতে পারি না।

মৃদুল দাশগুপ্ত : চতুর্দশপদী ২২২
   কেবল বাতাসে ভাসি, তুলোবীজ; আমাকে নেবে না?
মল্লিকা সেনগুপ্ত : স্বীয় ঘোটকীর গন্ধে ২৩৩



amitabha mukerjee (mukerjee [at] gmail.com) 17 Feb 2009